Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৪ মে ২০২৪

কুষ্টিয়ার দর্শনীয় স্থান

কুষ্টিয়ার দর্শনীয় স্থান – কুষ্টিয়ার ঐতিহাসিক এবং দর্শনীয় স্থান সমূহ

১. ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ

ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ কুষ্টিয়ার ঐতিহাসিক এবং দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে অন্যতম। রহস্যময় ঝাউদিয়া মসজিদকে ঘিরে প্রচলিত আছে নানা গুঞ্জন। জানা গেছে ১১ শ বছর আগে ইরাকের শাহ সুফি আদারি মিয়া এই অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করতে এসে মসজিদটি নির্মাণ করেন।মসজিদে তিনটি গম্বুজ ও চারকোনায় চারটি মিনার রয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা সদরের ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত মসজিদটি কুষ্টিয়া জেলার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান। ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ কীভাবে যাবো?কুষ্টিয়া জেলা সদর থেকে রিকশা বা অটো রিকশা করে সহযেই পৌঁছে যাওয়া যায় ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে।

২. কুষ্টিয়া ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিয় মসজিদ

কুষ্টিয়া শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থান হলো কুষ্টিয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটির কেন্দ্রিয় মসজিদ। এটি বাংলাদেশের ৩য় বৃহত্তম মসজিদ। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মসজিদ। সরকারি ভাবে কাজ শুরু হলেও পরে বিদেশি অনুদানে কাজ চলে কিন্তু পরবর্তীতে দুর্নীতির অভিযোগে বিদেশি দাতা সংস্থা তাদের অর্থ ফেরত নেয়। 
বলা হয়ে থাকে এই মসজিদের কাজ সম্পন্ন হলে এখানে এক সাথে ১৭ হাজার মুসলিম এক সাথে সালাত আদায় করতে পারবে। 

৩. মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা

উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যকদের পথিকৃৎ মির মশাররফ হোসেনের আবাস ভূমি মোশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা নামে পরিচিত। কুষ্টিয়া জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান এটি।কুষ্টিয়া পিকনিক স্পষ্ট হিসেবে এই বাস্তুভিটা খুবই জনপ্রিয়। মির মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটায় বর্তমানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়,একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লাইব্রেরি, জাদুঘর ও অডিটোরিয়াম রয়েছে।প্রতিদিন অসংখ্য দেশি বিদেশি পর্যটক বাস্তুভিটা ভ্রমন করতে আসেন।কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার লাহিনীপাড়ায় মির মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা অবস্থিত।কুষ্টিয়া জেলা সদর থেকে রিকশা বা ইজিবাইকে করে সরাসরি চলে আসা যায় মির মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটায়।

৪. পাকশি ব্রিজ

পাকশি রেল সেতু বাংলাদেশের সবথেকে বড় রেল চলাচলকারী সেতু।১৯১৫ সালের ৪ মার্চ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল।পাকশি ব্রিজ যার আরেক নাম হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কুষ্টিয়া জেলার অন্যতম একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান। এর অসাধারণ স্থাপত্য শৈলির গুনে প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থী চলে আসে এই ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। পাকশি ব্রিজ পদ্মা নদীর উপরে অবস্থিত বলে এই ব্রীজের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় নদীর অপরূপ দৃশ্য যে কারো মন ভালো করে দেয়।কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি ইউনিয়নের মাঝে পাকশি ব্রীজ অবস্থিত।ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে রিক্সা, অটো বা সিএনজি নিয়ে পাকশি রেলওয়ে স্টেশন নামলেই চোখে পড়বে অসাধারণ সৌন্দর্য ও আকর্ষণে ভরপুর পাকশি ব্রিজ।

৫. লালন শাহ সেতু

হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বা পাকশি রেল সেতুর ঠিক পাশেই পদ্না নদীর উপরে নির্মাণ করা হয়েছে লালন শাহ সেতু।ব্রিজটির পূর্বদিকে ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশি,পশ্চিমে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আর দক্ষিণে বিখ্যাত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।পাশাপাশি দুটি সেতু একটি সড়ক পথের আরেকটি রেলপথ,এ যেন এক স্বপ্নের ভুবন। পদ্মা নদীর কলকল শব্দ, বাতার,প্রকৃতি সব মিলিয়ে অসাধারণ এক পরিবেশ উপভোগ করতে প্রতিদিন বিকেলে ভিড় জমায় আসেপাশের এলাকার অসংখ্য প্রকৃতিপ্রেমী। কুষ্টিয়া জেলা থেক প্রথমে ভেড়ামারায় চলে আসতে হবে।তারপর রিকশা বা ইজিবাইকে করে ডিরেক্ট চলে যাওয়া যাবে লালন শাহ সেতু তে।

৬. স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ

কুষ্টিয়া জেলার প্রাচীন ইসলামের ইতিহাস বহনকারী মসজিদ “স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ “। বাংলাদেশের অতিপ্রাচীন এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন এই মসজিদটি।তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদের আয়তন একদমই ছোট।সর্বোচ্চ এক সারি মুসুল্লি একসাথে জামায়াত আদায় করতে পারবেন এই মসজিদে। আকৃতি ছোট হলেও কুষ্টিয়ার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন হিসেবে মসজিদটি খুবই জনপ্রিয়। জানা গেছে ১৬৬০ সালে শায়েস্তা খাঁ এর আমলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল এবং তখন এর আয়তন ছিল আরও ছোট।স্থানীয় অনেক লোকজন এই মসজিদে ভক্তির সাথে মান্নাত করেন এবং সিন্নি প্রদান করেন।পুরাতন স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন ” স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ ” খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলার আলামপির ইউনিয়নের স্বস্তিপুর গ্রামে অবস্থিত।

৭. বাইপাস পার্ক ( রোজ হলিডে রিসোর্ট)

কুষ্টিয়ার বাইপাসে নব নির্মিত রিসোর্ট” রোজ হলিডে “।অসাধারণ মনোরম পরিবেশে সুসজ্জিত ডেকোরেশন করা।কুষ্টিয়ার ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলো দেখতে এসে পরিবার পরিজন নিয়ে চমৎকার একটি দিন কাটাতে চাইলে চলে আসতে পারেন বাইপাস পার্কে।
বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য আছে বিভিন্ন ধরনের রাইড।আছে অসম্ভব সুন্দর একটি পদ্ম পুকুর ও পুকুর ভরা অসংখ্য পদ্মফুলে। রিসোর্ট এর মধ্যে আছে ছোট ছোট কটেজ ও রেস্টুরেন্ট।রিসোর্ট প্রবেশ করতে পারবেন ৫০৳ প্রবেশমূল্য পরিশোধ করে।

৮.কামরুল ইসলাম সিদ্দিক শিশু 

পার্কটি কুষ্টিয়া শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। এই পার্কটি কুষ্টিয়ার একজন বিখ্যাত ব্যক্তি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের নামে নামকরণ করা হয়েছে, তিনি মূলত কুষ্টিয়া শহরের উন্নয়নে অনেক অবদান রেখেছিলেন। তার অবদানের স্বীকৃতি দিতে কুষ্টিয়া পৌরসভা ঈদগাহ পাড়ায় তার নামে পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়।এটি স্থানীয়দের মধ্যে কুষ্টিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় স্থান। কুষ্টিয়া শহর থেকে পার্কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। পার্কটি আবাসিক এলাকার কাছাকাছি হওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই বিশেষ করে বিকেলে পার্কটিতে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। অবসর সময় কাটানোর জন্য সব বয়সের মানুষ এখানে আসেন। বেশির ভাগ মানুষই তাদের বাচ্চাদের নিয়ে এখানে আসে আনন্দের জন্য। কুষ্টিয়া জেলার পাশাপাশি আশেপাশের অন্যান্য জেলার মানুষ প্রতিদিন এই পার্কে ঘুরতে আসেন।পার্কে বেশ কিছু মজাদার রাইডও পাওয়া যায়। পার্কে ক্যাবল কার রয়েছে। রাইডের খরচও অনেক কম। সব রাইডের দাম ৫০ টাকা। পার্ক এন্ট্রি ফি ৫০ টাকা। সংস্কৃতির রাজধানী কুষ্টিয়া জেলার বেশ কয়েকটি সম্ভাবনাময় ঐতিহাসিক নিদর্শন হয়ে উঠতে পারে এই জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ।সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কুষ্টিয়া জেলা পরিনত হবে বিখ্যাত এক পর্যটন জেলা শহর হিসেবে।